নাগরিক ডেস্ক:
পদ্মা সেতু ২০১৯ সালের জুনে চালু হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতুর নির্মাণকাজ চলায় খুবই উচ্ছ্বসিত মুহিত বলেন, ‘কাজ ভালোভাবেই এগোচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী বছরের জুনের মধ্যে সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন পারাপার হতে পারবে।’
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ভ্যাটদাতাদের সম্মাননা সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিকের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে অনুষ্ঠানে মুহিত বলেন, ‘তিনি (জোয়েলিক) একজন অপদার্থ ও বাজে লোক।’
পদ্মা সেতুতে ঋণ না পাওয়ার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র করেছে জোয়েলিক—এমন অভিযোগ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সে (জোয়েলিক) একজন বদমাশ ও অসম্ভব খারাপ লোক।’
মুহিত আরও বলেন, ‘রবার্ট জোয়েলিক তার মেয়াদের শেষ সময়ে এসে পরামর্শক নিয়োগে ঘুষ নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে অর্থায়ন স্থগিত করেন। এ বিষয়ে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান ও তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব বর্তমানে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূইয়া ও আমার ওপর কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এসব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।’
আধঘণ্টার সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বেশিরভাগ সময় বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করেন মুহিত। তিনি বলেন, ‘জোয়েলিক চক্রান্ত করে পদ্মা সেতুর ঋণ আটকে দেয়। তবে বাংলাদেশের সৌভাগ্য যে, জোয়েলিকের পরে যিনি প্রেসিডেন্ট হয়ে এসেছেন, তিনি বুঝতে পারেন বিশ্বব্যাংকের এ সিদ্বান্ত ঠিক হয়নি। আমরা তার সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাই। কিন্তু তিনি শর্ত দিয়েছিলেন, আগের চুক্তি বাতিল করে আবার নতুন করে কাজ শুরু করতে হবে।’
মুহিত জানান, বিশ্বব্যাংকের ওই প্রস্তাবে রাজি হলে পদ্মা প্রকল্প বাস্তবায়ন আরও পিছিয়ে যেত। সে জন্য নতুন করে আর আলোচনায় যাওয়া হয়নি।
পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নেত্রী আমাকে নির্দেশ দেন বিশ্বব্যাংকের টাকা ছাড়াই পদ্মা সেতু করতে হবে এবং নিজস্ব অর্থায়নেই তা হবে। সরকারে এ সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাংককে জানিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্বব্যাংককে বলে দেওয়া হয় তাদের টাকা ছাড়াই সেতু নির্মাণ হবে। এখন নিজেদের টাকায় সেতুর কাজ চলছে।’
অর্থমন্ত্রী যখন বক্তব্য রাখেন তার পাশে ছিলেন সৈয়দ আবুল হোসেন, ড. মসিউর রহমান এবং এনবিআর চেয়ারম্যোন। এ সময় তাদের দেখিয়ে মুহিত জানান, ‘আমিসহ এই চারজন জোয়েলিকের ষড়যন্ত্রের স্বীকার। কানাডার আদালতের রায়ে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলো না; আমরা কলঙ্কমুক্ত হলাম।’